মাছ-মাংসের চেয়েও বেশি প্রোটিন যে সব খাবারে
নভে 4, 2023
আমাদের শরীরের জন্য প্রোটিন একটি অপরিহার্য পুষ্টি উপাদান যা পেশী গঠন এবং মেরামত, হজমশক্তি উন্নত করা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করার জন্য প্রয়োজনীয়। ত্বক, রক্ত, পেশী, তরুণাস্থি এবং হার গঠনে প্রোটিনের ভূমিকা অনেক। শরীরের প্রতি কেজি ওজনের জন্য ন্যূনতম ০.৮ গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন। আমাদের শরীর একসঙ্গে সর্বোচ্চ ৩০ গ্রাম আমিষ হজম করতে পারে। অনেকেই মনে করেন শুধু মাংস, মাটন এবং মাছের মতো আমিষ খাবারে পাওয়া যায় প্রোটিন যা একেবারে ভুল! প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার গুলোর মধ্যে সয়াবিন , মুসুর ডাল , দুধ , মাখন , নারিকেল , আটা , ভুট্টা, মটরশুটি, মটর, এবং মসুর ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
Similar topics for you...This topic continues below.
দেশে ই-সিগারেট বন্ধে ৯টি সুপারিশ, নিষিদ্ধের দাবি ২২ সংগঠনের
দিনে ১৫টি সিগারেট খাওয়ার চেয়েও বেশি ক্ষতিকর একাকিত্ব
নিয়মিত ব্যায়ামের শীর্ষ ৫ টি উপকারিতা
এই খাবার গুলো আপনি আপনার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন এবং আপনি মাছ-মাংস ছাড়াই প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে পারে।
ডাল
প্রোটিনের ভাল উৎস হল ডাল। যাঁরা মাছ, মাংস খেতে পারছেন না তাঁদের প্রতি দিনের খাবারে ডাল থাকা আবশ্যক। কারণ ডাল রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। ডালে থাকা ফাইবার অন্ত্রের স্বাস্থ্যকর ব্যাক্টেরিয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে, হজমে সহায়তা করে।
চিনাবাদাম
আরেকটি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার হল চিনাবাদাম। এক কাপ চিনাবাদামের ১/৪ অংশে ৮ গ্রাম প্রোটিন থাকে। এতে হার্ট-স্বাস্থ্যকর মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ম্যাগনেসিয়ামও রয়েছে। ম্যাগনেসিয়াম শক্তি বিপাক এবং প্রোটিন সংশ্লেষণে সাহায্য করে।
পনির
কুটির পনির কটেজ পনির বা বাড়িতে তৈরি পনির পেশী তৈরির জন্য বেশিরভাগ বডি বিল্ডারদের প্রধান পছন্দ। ১/২ কাপ কুটির পনিরে ১৪ গ্রাম প্রোটিন থাকে।
ডিম
ডিমে প্রোটিন বেশি থাকে। ডিম পৃথিবীর অন্যতম স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর খাবার। স্বল্প ব্যয়ে খুব উচ্চমানের প্রোটিন চান তবে ডিমের চেয়ে ভাল প্রোটিন উৎস পাবেন না। এছাড়াও ডিমে ৯ টি প্রয়োজনীয় অ্যাসিড, কোলিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং ভিটামিন ডি রয়েছ। ডিমে প্রচুর প্রোটিন থাকে তবে বিশেষত এর সাদা অংশটি। প্রতি ১০০ গ্রাম ডিমের হলুদ কুসুমে প্রায় ১৩ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায় এবং এর সাদা অংশে গা গ্রাম প্রোটিন রয়েছে। ওটমিল কার্বোহাইড্রেটের একটি চমৎকার উৎস। এটিতে কম গ্লাইসেমিক সূচক রয়েছে। কম গ্লাইসেমিক সূচকযুক্ত খাবারের সুবিধা হল যে এগুলিতে ফাইবার এবং মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট বেশি থাকে, তৃপ্তি বাড়ায়, ক্ষুধা কমায় এবং চর্বি হ্রাসে সহায়তা কর।
দুধ
দুধ, দই, পনির এবং যা কিছু দুধ থেকে তৈরি হয়, এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে । দুধ এবং দই পনির থেকে আমরা যে প্রোটিন পাই তাতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে যা আপনার হাড়কে শক্তিশালী রাখতে অনেক সাহায্য করে। বিশেষত যাদের বয়স ৪০ বছর বা ৫০ বছরের উপরে, আপনার বয়স বাড়ার সাথে সাথে আপনার দেহে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ হ্রাস পায়, তাই আপনাকে প্রতিদিন আপনার খাবারে দুধ রাখা দরকার। প্রতি ১০০ গ্রাম গরুর দুধে ৩ থেকে ৪ গ্রাম প্রোটিন রয়েছে।
কিসমিস ও আঙ্গুর
১০০ গ্রাম কিসমিসে পেয়ে যাবো ৩.৩ গ্রাম প্রোটিন। এটা তো শুঁকনো আঙুর জানা আছে নিশ্চয়। শুঁকনো হবার জন্য পানির পরিমাণ কমে গিয়ে পরিমাণের তুলনায় প্রোটিনের পরিমাণ বেড়ে গেছে। ১০০ গ্রাম আঙুরে প্রোটিন পাওয়া যাবে বেশ কম, ০.৬ গ্রামের মতো।
পেয়ারা
প্রতি ১০০ গ্রাম পেয়ারাতে পেয়ে যাবেন ২.৬ গ্রাম প্রোটিন, যা দৈনিক চাহিদার মাত্র ৫%। প্রোটিনের উৎস হিসেবে অন্তত তেঁতুলের থেকে যুতসই ।
ডালিম ও কাঠাল
এছাড়া প্রতি ১০০ গ্রাম ডালিমে রয়েছে ১.৭ গ্রাম প্রোটিন। আর প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁঠালে পাওয়া যায় ১.৭ গ্রাম প্রোটিন।
খেজুর
এক টুকরা খেজুরে পাওয়া যায় ০.৫ গ্রাম প্রোটিন। আর ১০০ গ্রাম থেকে পাওয়া যাবে আনুমানিক ২ গ্রামের মতো। মোটামুটি গড়পড়তা হিসেব আরকি, জাতভেদের তো আবার অভাব নেই!
এছাড়া প্রতি ১০০ গ্রাম ব্ল্যাকবেরিতে পাওয়া যায় ১.৪ গ্রাম প্রোটিন, যা দৈনিক চাহিদার মাত্র ৩%।
প্রতি ১০০ গ্রাম কলাতে পেয়ে যাবেন ১.১ গ্রাম প্রোটিন, যা দৈনিক চাহিদার মাত্র ২%। তবে একটা মিডিয়াম সাইজের কলাতে পাবো ১.৩ গ্রাম প্রোটিন।
একদিনে একজন পুরুষের ৫৬ গ্রাম এবং একজন নারীর ৪৬ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করা প্রয়োজন ইনস্টিটিউট অফ মেডিসিন এর মতে। কিন্তু এর চেয়ে বেশি পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ করা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ, শুধু খারাপই নয় বিপজ্জনকও বটে। তাই অনেক বেশি প্রোটিন গ্রহণ করা বিপজ্জনক এবং এ ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
তবে, ব্যক্তিগত প্রোটিনের চাহিদা বয়স, ওজন, কাজের চাপ এবং অসুস্হতার কারণের উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হতে পারে। প্রোটিন গ্রহণের বিষয়ে আপনার উদ্বেগ থাকলে, ডাক্তার বা ডায়েটিশিয়ানের সাথে পরামর্শ করাই ভাল।