ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় হাসপাতালে ইসরায়েলের বোমা হামলার জেরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত বৈঠক বাতিল করেছেন আরব নেতারা। স্থানীয় সময় গতকাল অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আল-আহলি আরব হাসপাতালে মঙ্গলবার ইসরায়েলি হামলায় অন্তত পাঁচশ লোকের প্রাণ গেছে। মঙ্গলবার রাতে মধ্য এই হামলা চালানো হয়।
আজ বুধবার ইসরায়েল সফরে যাওয়ার কথা বাইডেনের। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে চলমান সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে মিত্র ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন জানানোর অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও শীর্ষ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের পর এবার তেল আবিব সফরে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ইসরায়েল সফর শেষে জর্ডানের রাজধানী আম্মানে যাওয়ার কথা ছিল বাইডেনের। সেখানে জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ, মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি ও ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠকের কথা ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্টের।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, বুধবার (১৮ অক্টোবর) জর্ডানে বাইডেন ও আব্বাসের বৈঠকটি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আল-আহলিল নামক হাসপাতালে ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলার পর বৈঠকটি বাতিল করে দিয়েছেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট।
বুধবার বাইডেনের সঙ্গে এ বৈঠকে জর্ডানের রাজা আব্দুল্লাহ-২ এবং মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ এল-সিসিরও যোগ দেওয়ার কথা ছিল। বৈঠকটিতে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা করতেন তারা।
তবে জর্ডান জানিয়ে দিয়েছে, বাইডেনের সঙ্গে তিন আরব নেতার যে নির্ধারিত বৈঠক হওয়ার কথা ছিল, তা আর হচ্ছে না। গাজার হাসপাতালে হামলার প্রতিবাদে জর্ডান বাইডেনের সঙ্গে নির্ধারিত এ বৈঠক বাতিল করেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফিলিস্তিনির দুই কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘গাজার হাসপাতালে ইসরায়েল গণহত্যা চালানোর পর খুব ক্ষুব্ধ হয়েছেন প্রেসিডেন্ট (আব্বাস) এবং তিনি (জর্ডান থেকে) তাৎক্ষণিকভাবে রামাল্লায় ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’
তবে পশ্চিমাদের সঙ্গে সখ্যতা থাকায় মাহমুদ আব্বাসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করেছেন সাধারণ ফিলিস্তিনিরাই।
বিশেষ করে রামাল্লাহ শহরে মঙ্গলবার রাতেই বড় আকারের বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। যেটি দমনে কাঁদানে গ্যাস ও স্টান গ্রেনেড ব্যবহার করেছে ফিলিস্তিনি পুলিশ।
আল জাজিরা জানিয়েছে, হাসপাতালে হামলার পর মাহমুদ আব্বাসের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়েছেন ইসরায়েলি দখলদারিত্বের অধীনে থাকা পশ্চিম তীর ও অন্যান্য শহরের বাসিন্দারা। তারা মনে করছেন, গাজার বিরুদ্ধে ইসরায়েল যে আগ্রাসন দেখাচ্ছে সেটি বন্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেননি মাহমুদ আব্বাস।